দেশকন্ঠ অনলাইন : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) “মাদক কে লাল কার্ড” এবং “মাদক নয় মৃত্যু নয়, মাদক মুক্ত জীবন চাই" স্লোগানে মাদক বিরোধী ও সচেতনতামূলক র্যালী ও পথসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সামাজিক সংগঠন লাল সবুজ উন্নয়ন সংঘের ব্যানারে এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (০২ জানুয়ারি) বিকাল ৩ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবন থেকে মাদকবিরোধী র্যালীটি শুরু হয়ে শহীদ মিনারের পাদদেশে এসে শেষ হয়। র্যালী শেষে সেখানে পথসভা করেন তারা।।
সভায় সংগঠনের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ৪ দফা দাবি দেয়া হয়। দাবিসমূহ হলো- মাদকাসক্তি প্রতিরোধে অতিদ্রুত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদক বিরোধী সেল গঠন করতে হবে, মাদক প্রতিরোধে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ডোপ টেস্ট সিস্টেম চালু করতে হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশে এর অন্তর্ভুক্তি করতে হবে, ক্যাম্পাসের যেসব দোকানে ও পয়েন্টগুলোতে মাদকের সাপ্লাই দেয়া হয় সেই ব্যাপারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে এবং মাদকাসক্তি প্রতিরোধে শিক্ষার্থীদের সচেতনতায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল ডিপার্টমেন্টে ও হলগুলোতে মাদকবিরোধী সচেতনামূলক কাউন্সিলিং সভার আয়োজন করতে হবে।
পথসভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী ও লাল সবুজ উন্নয়ন সংঘ, ঢাকা জেলা শাখার সভাপতি জিয়া উদ্দিন আয়ানের সঞ্চালনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বক্তব্য রাখেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আবদুর রব বলেন, "আগের প্রশাসনের একটা বড় ব্যর্থতা ছিল তারা শিক্ষার্থীদের স্বার্থ নিয়ে ভাবতো না। আমাদের বর্তমান প্রশাসন শিক্ষার্থীদের স্বার্থের বিষয়ে সম্পূর্ণ সচেতন। এমনকি নববর্ষের আগের দিনেও আমাদের প্রক্টরিয়াল টিম সম্পূর্ণ সজাগ ছিল। শিক্ষার্থীবান্ধব মাদকমুক্ত ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠাই আমাদের লক্ষ্য।"
উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মাহফুজুর রহমান বলেন, "কোন দেশের প্রধান শক্তি হলো তার যুবশক্তি। আর যুবশক্তিকে ধ্বংস করার জন্য প্রধান হাতিয়ার হল মাদক। দেশের অন্যান্য জায়গার মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদকের হার অনেক বেশি। ছাত্র জনতার অভ্যস্থানের পরবর্তী সময়ে নতুন ক্যাম্পাস তৈরিতে আমরা সে পথেই এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা এক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছি। আমি ছাত্রদের সকলকে মাদকের বিরুদ্ধে এগিয়ে এগিয়ে আসার জন্য অনুরোধ করছি।"
সমাপনী বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি ছেলে-মেয়ের শিক্ষা জীবন, ব্যক্তি জীবন ও ভবিষ্যৎ আমাদের কাছে আমানত। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি আমার এই চাকরি, এই উপার্জনের সততা ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করার জন্য আমি কখনই একজন শিক্ষার্থীকে মাদকাসক্ত হতে দিতে পারিনা। একজন শিক্ষার্থীর মেধা আর মাদক একসঙ্গে যেতে পারে না, ফলে একজন মেধাবী মাদকাসক্ত দেশের সম্পদ হতে পারে না। তাই দল-মত নির্বিশেষে সকলে এ ধরণের সামাজিক সংগঠনের সাথে একাত্মতা পোষণ করে নিজেকে মাদকমুক্ত করুন এবং অন্যকে মাদকমুক্ত রাখুন।"
দেশকন্ঠ/এআর