মৃণাল বন্দ্য, কানাডা থেকে : কানাডার রাজনীতিতে বেশ কিছুদিন ধরেই টালমাটাল অবস্থা। সংসদে অনাস্থা প্রস্তাবও এসেছে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর বিরুদ্ধে। বারবার টিকে গেলেও ৯ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা কানাডার প্রধানমন্ত্রীর দিন সম্ভবত ফুরোলো এবার। যে কোন সময় পদত্যাগের ঘোষণা দিতে পারেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, এমনটাই জানিয়েছে রয়টার্স।
যদিও এ বিষয়ে তিনি এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি। ট্রুডোর এই চিন্তাধারার সঙ্গে পরিচিত একটি সূত্র রোববার এ তথ্য জানিয়েছে। গ্লোব অ্যান্ড মেইলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ সোমবার যত দ্রুত সম্ভব পদত্যাগের ঘোষণা দিতে পারেন ট্রুডো। গ্লোব অ্যান্ড মেইলের প্রতিবেদনের পর সূত্রটি রয়টার্সের সঙ্গে কথা বলেছে। তবে তারা এটাও বলছে যে, সোমবার ঘোষণা না আসলেও আগামী বুধবার লিবারেল পার্টির আইনপ্রণেতাদের জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার আগেই এ ঘোষণা আসতে পারে।
রয়টার্স বলছে, ট্রুডোর সম্ভাব্য এই পদত্যাগের ফলে দেশটির ক্ষমতাসীন এই দলটিকে এমন এক সময়ে স্থায়ী প্রধান ছাড়াই রাজনৈতিক ময়দানে ছেড়ে দেবে। এখন জরিপগুলোতেও দেখা যাচ্ছে যে- চলতি বছরের অক্টোবরের শেষের দিকে অনুষ্ঠিত হতে হওয়া নির্বাচনে লিবারেলরা রক্ষণশীলদের কাছে খারাপভাবে হেরে যাবে। তবে ট্রুডোর পদত্যাগের ফলে নতুন সরকার গঠনের জন্য দ্রুত নির্বাচনের আহ্বান জানানোরও সম্ভাবনা রয়েছে।
ট্রুডোর পদত্যাগ লিবারেল পার্টিকে স্থায়ী নেতৃত্বশূন্যতার দিকে ঠেলে দিতে পারে।
ট্রুডো এ পর্যন্ত দুটি বিশেষ নির্বাচনে ভোট ও নিরাপদ আসন হারানোর বিষয়ে উদ্বিগ্ন লিবারেল আইনপ্রণেতাদের প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছিলেন। কিন্তু ডিসেম্বরের পর থেকে তাঁর পদত্যাগের আহ্বান জোরালো হচ্ছে। বিশেষ করে ট্রুডো যখন অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ডকে পদচ্যুত করার চেষ্টা করেছিলেন। ক্রিস্টিয়া ছিলেন ট্রুডোর মন্ত্রিসভার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের একজন। তিনি ট্রুডোর দেওয়া ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাবের বিরোধিতা করার পর তাঁর বিরাগভাজন হয়ে পড়েন। গ্লোব অ্যান্ড মেইলের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ট্রুডো অবিলম্বে পদত্যাগ করবেন, নাকি দলের একজন নতুন নেতা নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে থাকবেন, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
২০১৩ সালে লিবারেল পার্টি যখন গভীর সমস্যায় পড়েছিল এবং প্রথমবারের মতো হাউস আব কমন্সে তৃতীয় স্থানে নেমে গিয়েছিল, তখন দলটির নেতা হিসেবে দায়িত্ব নেন জাস্টিন ট্রুডো। তিনি কানাডার প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে সরে দাঁড়ালে দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে একটি স্থিতিশীল সরকার গঠনের জোর দাবি উঠতে পারে, যাতে এই সরকার আগামী চার বছর নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনকে মোকাবিলা করতে পারে।
দেশকণ্ঠ/আসো