• রবিবার, ০৯ মার্চ ২০২৫, ২৪ ফাল্গুন ১৪৩১  নিউইয়র্ক সময়: ০০:৫৯    ঢাকা সময়: ১০:৫৯

রংপুর সিএমএইচে বিনামূল্যে ছানি অপারেশন সেনাবাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা

দেশকন্ঠ  অনলাইন : রংপুর সেনানিবাসের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) বিনামূল্যে ছানি অপারেশন করায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে গিয়ে চারজন দরিদ্র চক্ষু রোগী আজ বুধবার আবেগপ্রবণ ও অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬৬ পদাতিক ডিভিশনের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) এবং রংপুর এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল মোহাম্মদ কামরুল হাসান আজ সিএমএইচে খোঁজখবর নিতে গেলে এ হৃদয়স্পর্শী দৃশ্যের অবতারণা হয়।

সিএমএইচের কমান্ড্যান্ট কর্নেল ডা. এ কে এম জহিরুল হোসেন খান এবং এর চক্ষু বিশেষজ্ঞ লেফটেন্যান্ট কর্নেল ডা. মো. মুরাদ হোসেন, ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তারা এবং স্থানীয় সাংবাদিকরা এসময় উপস্থিত ছিলেন। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এর আগে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬৬ পদাতিক ডিভিশন গত ২০ ফেব্রুয়ারি নগরীর শীতল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আয়োজিত বিনামূল্যে চক্ষু সেবা ও চিকিৎসা শিবিরে ১৬৯ জন পুরুষ এবং ১৬৭ জন মহিলাসহ ৩৩৬ জন চক্ষু রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদান করে।

জিওসি মেজর জেনারেল মোহাম্মদ কামরুল হাসান ওইদিন সিএমএইচ এবং রংপুর মেডিকেল কলেজের সহযোগিতায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬৬ পদাতিক ডিভিশন কর্তৃক আয়োজিত বিনামূল্যে চক্ষু সেবা ও চিকিৎসা শিবিরের উদ্বোধন করেন। ওই শিবিরে সিএমএইচ থেকে তিনজন এবং রংপুর মেডিকেল কলেজের দুইজনসহ মোট পাঁচজন চক্ষু বিশেষজ্ঞ, নার্স, টেকনোলজিস্ট এবং সহকারীদের সঙ্গে নিয়ে চক্ষু রোগীদের পরীক্ষা করে বিনামূল্যে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও ওষুধ প্রদান করেন।

পরবর্তীতে ওই ক্যাম্প থেকে ১৭ জন রোগীকে সিএমএইচে বিনামূল্যে চক্ষু অস্ত্রোপচারের জন্য নির্বাচিত করা হয়। চক্ষু বিশেষজ্ঞ লেফটেন্যান্ট কর্নেল ডা. মো. মুরাদ হোসেন তার টিম সদস্যদের সঙ্গে মঙ্গলবার সিএমএইচে প্রথম ধাপে নির্বাচিত চারজন রোগীর সফলভাবে ছানি অস্ত্রোপচার করেন। এই চারজন রোগী হলেন- রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ এলাকার আক্কাস আলী (৬২), সদর উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের ইয়াছুব আলী (৬৫) এবং মিঠাপুকুর উপজেলার জায়গিরহাট গ্রামের মেহেরুন নাহার (৬০) এবং লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার আবতার আলী (৬০)।

আজ বুধবার মেজর জেনারেল মোহাম্মদ কামরুল হাসান সিএমএইচ পরিদর্শনকালে চারজন চক্ষু রোগীর সঙ্গে কথা বলেন, তাদের সুস্থতা এবং সিএমএইচে ছানি অস্ত্রোপচারের পর তাদের চোখের স্বাস্থ্যের অবস্থা সম্পর্কে খোঁজখবর নেন।
চারজন রোগীই বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, জিওসি, সিএমএইচ কর্তৃপক্ষ, চিকিৎসক, নার্স এবং অন্যান্য কর্মীদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

এ সময় মেহেরুন নাহার জিওসিকে বলেন, তিনি ভালোভাবে কানে শোনেন না। তখন জিওসি তাৎক্ষণিকভাবে সিএমএইচ কর্তৃপক্ষকে তার কান পরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা ও ঔষুধ প্রদানের জন্য নির্দেশনা দেন।এসময় জিওসি বলেন, ‘মাঠ পর্যায়ের জনগণের কাছে স্বাস্থ্যসেবাসহ মানবিক সেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য আমরা একই ধরণের মানবিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব ইনশাআল্লাহ।’ আলাপকালে লেফটেন্যান্ট কর্নেল ডা. মো. মুরাদ হোসেন বলেন যে চারটি ছানি অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে এবং রোগীদের ছাড়পত্র দেয়ার আগে সিএমএইচের অস্ত্রোপচার পরবর্তী পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

রংপুরের সিএমএইচের কমান্ড্যান্ট কর্নেল ডা. একেএম জহিরুল হোসেন খান জানান, অন্যান্য নির্বাচিত রোগীদেরকে প্রস্তুত করার পরে তাদের পরবর্তী চিকিৎসা ও অস্ত্রোপচার পর্যায়ক্রমে করা হবে। কারণ তাদের মধ্যে কেউ কেউ ডায়াবেটিস এবং অন্যান্য অসুস্থতায় ভুগছেন। দরিদ্র রোগী মেহেরুন নাহার বলেন, তিনি একজন বিধবা এবং তিন কন্যার মা, চরম দারিদ্র্যের কারণে তার ডান চোখের চিকিৎসা এবং অস্ত্রোপচার করার কোনও উপায় ছিল না। তিনি বলেন, ‘অন্যদের কাছ থেকে জেনে আমি গত ২০ ফেব্রুয়ারি নগরীতে বিনামূল্যে চক্ষু সেবা শিবিরে আমার চোখ পরীক্ষা করতে এসেছিলাম। সিএমএইচে ছানি অস্ত্রোপচারের পর আমি এখন ভালোভাবে দেখতে পাচ্ছি। এর জন্য আমি সর্বশক্তিমান আল্লাহ এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’

হতদরিদ্র রোগী আক্কাস আলী, যিনি আগে অটোরিকশা চালিয়ে নিজের পরিবারের জীবিকা নির্বাহ করতেন, তিনি বলেন যে মাইকিং এ ঘোষণা শুনে গত ২০ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা শিবিরে তার চোখ পরীক্ষা করতে এসেছিলেন।তিনি বলেন, ‘দৃষ্টিশক্তি কম থাকার কারণে আমি অটোরিকশা চালানো ছেড়ে দিয়েছি। ফলে, আমাকে চরম দারিদ্র্যের মধ্যে পড়তে হয়েছে। এখন সিএমএইচে ছানি অস্ত্রোপচারের পর সবকিছু দেখতে পেয়ে আমি খুব খুশি।’এজন্য তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং সিএমএইচ কর্তৃপক্ষকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
দেশকন্ঠ/এআর

 

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

আমাদের কথা

ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বব্যাপী অনলাইন মিডিয়া। গতি ও প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে মানুষও তথ্যানুসন্ধানে নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছে অনলাইন। যতই দিন যাচ্ছে, অনলাইন মিডিয়ার সঙ্গে মানুষের সর্ম্পক তত নিবিড় হচ্ছে। দেশ, রাষ্ট্র, সীমান্ত, স্থল-জল, আকাশপথ ছাড়িয়ে যেকোনো স্থান থেকে ‘অনলাইন মিডিয়া’ এখন আর আলাদা কিছু নয়। পৃথিবীর যে প্রান্তে যাই ঘটুক, তা আর অজানা থাকছে না। বলা যায় অনলাইন নেটওয়ার্ক এক অবিচ্ছিন্ন মিডিয়া ভুবন গড়ে তুলে এগিয়ে নিচ্ছে মানব সভ্যতার জয়যাত্রাকে। আমরা সেই পথের সারথি হতে চাই। ‘দেশকণ্ঠ’ সংবাদ পরিবেশনে পেশাদারিত্বকে সমধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে বদ্ধপরির। আমাদের সংবাদের প্রধান ফোকাস পয়েন্ট সারাবিশ্বের বাঙালির যাপিত জীবনের চালচিত্র। বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের সংবাদও আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা একঝাক ঋদ্ধ মিডিয়া প্রতিনিধি যুক্ত থাকছি দেশকণ্ঠের সঙ্গে।