দেশকন্ঠ অনলাইন : ঢাকা শহরে ওয়াসার পানিতে কেঁচো, পোকামাকড় এবং ময়লা, দুর্গন্ধে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে ‘আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি)’। ওয়াসার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে যে সমস্ত দুর্নীতিবাজ কেঁচো বা পোকামাকড় বসে আছে তাদের অপসারণ ব্যতীত নগরবাসীকে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা সম্ভব নয় বলেও মনে করে দলটি। অন্যদিকে ঢাকা শহরকে বাসযোগ্য করতে ৩০টি সুপারিশ করেছে দলটি।রোববার (২০ এপ্রিল) একদিনে দুই কর্মসূচি পালন করে এবি পার্টি।‘ওয়াসার দূষিত পানি, ভয়াবহ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে নগরবাসী’ বিষয়ে রাজধানীর বিজয়নগরে এবি পার্টি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বক্তব্য তুলে ধরেন এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসরীন সুলতানা মিলি।
এ সময় এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, “গত ফ্যাসিবাদের সময় বাইশ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প নিয়েছিল ওয়াসার লুটেরা এমডি তাসকিন এ আহমেদ। যার পুরোটাই পানি শোধনের পরিবর্তে আওয়ামী লুটেরাদের পকেটে ঢুকেছে। প্রতি বছর পানি নিয়ে একই পরিস্থিতি বিরাজ করলেও এর কোনো সমাধান নেই। বছরের পর বছর ধরে কোন সরকারই জনগণের মৌলিক অধিকার বিশুদ্ধ খাবার পানির নিশ্চয়তা তৈরি করতে পারেনি। ওয়াসার পানিতে ভয়াবহ ইকোলাই ভাইরাস পাওয়ার পরও ওয়াসা নির্বিকার।”তিনি বলেন, “ওয়াসার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে যে সমস্ত দূর্নীতিবাজ কেঁচো বা পোকামাকড় বসে আছে তাদের অপসারণ ব্যতীত নগরবাসীকে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা সম্ভব নয়।”
ওয়াসার দূষণ ও সমাধান নিয়ে মিলি বলেন, “প্রতি বছরই গ্রীষ্মের শেষ এবং বর্ষার শুরুতেই ওয়াসার পানি হয়ে ওঠে নোংরা পোকামাকড়ের প্রজননক্ষেত্র। দূষণের পরিমাণ এতটাই বাড়ে যে এর কারণে রোগের প্রাদুর্ভাব প্রচণ্ডভাবে বেড়ে যায়। কিন্তু এটা নিয়ে কোনো দীর্ঘমেয়াদী সমাধান চিন্তা করা হয়নি। ২০১৯ সালে একজন আইনজীবীর রিটে হাইকোর্ট ডিভিশন ৭ দিনের মধ্যে জানতে চেয়েছিলেন ওয়াসার পানির স্যাম্পলে মল, মূত্র এবং অ্যামোনিয়ার উপস্থিতি কেন পাওয়া গেছে? যার উত্তর আজ প্রায় ৭ বছরেও পাওয়া যায়নি যা অনাকাঙ্ক্ষিত।”
“ঢাকা শহরে শীতের পরেই শুরু হয় অপরিকল্পিত রাস্তা খোড়াখুড়ির কম্পিটিশন, এবং তাতে প্রায়ই দেখা যায় সুয়ারেজ এবং পানির লাইন ফুটো হয়ে এক হয়ে গেছে,” বলেও জানান তিনি।মিলি বলেন, “ওয়াসার আগের এমডি তাকসিম এ খানের মতো বর্তমান এমডিরও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে কোন দৃশ্যমান কাজ করতে দেখিনি। হাজার হাজার নাগরিকের যেখানে ই-কোলাই জীবানু এবং পোকামাকড় দিয়ে পূর্ণ পানি খেয়ে নাভিশ্বাস উঠার যোগাড় তখন ওয়াসার এমডির পক্ষ থেকে সমাধান তো দূরের কথা কোন বক্তব্যও পাইনি।”
তিনি বলেন, “জুরাইন, মগবাজারসহ বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের এ নিয়ে ভোগান্তির শেষ নেই। রান্নাসহ দৈনন্দিন কাজে ময়লা ও দুর্গন্ধযুক্ত পানি ব্যবহারের ফলে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন এই এলাকার বাসিন্দারা। জুরাইনের স্থানীয় মসজিদের গভীর নলকূপ এখন শেষ ভরসা। সেখান থেকে নামমাত্র মূল্যে পানি কিনে তারা চলছেন বছরের পর বছর। ওয়াসার বিল দেওয়ার পরেও এইরকম নাগরিক ভোগান্তি জুলাই অভ্যুত্থান এর স্পিরিটের সম্পূর্ণ বিপরীত।”
“আমরা আহ্বান জানাচ্ছি, অবিলম্বে পানি এবং সুয়ারেজ লাইন কোথায় মিলিত হয়েছে তা চিহ্নিত করে তা ঠিক করুন।”
“দীর্ঘমেয়াদী পদক্ষেপ হিসেবে পানি ফিল্টার করার প্রযুক্তি ব্যাবহার করা, ভাল সাপ্লাই চেইন মেন্টেইন করা, পুরোনো লাইনগুলো রিপ্লেস করা, অবৈধ লাইনগুলো বন্ধ করা এবং সিটি করপোরেশনের সাথে লিয়াজোঁ করে রাস্তার কাজে হাত দিতে হবে যেন অপরিকল্পিত খুড়োখুড়িতে প্রতি বছরই সাধারণ মানুষ একই ভোগান্তিতে না পরেন।”
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টি ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সদস্য সচিব আহমেদ বারকাজ নাসির, সহকারী প্রচার সম্পাদক রিপন মাহমুদ, আজাদুল ইসলাম আজাদ, সহকারী দফতর সম্পাদক অ্যাডভোকেট শরণ চৌধুরী, মশিউর রহমান মিলু, সহকারী অর্থ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক, সহকারী নারী বিষয়ক সম্পাদক শাহিনুর আক্তার শীলা, যাত্রাবাড়ী থানা আহ্বায়ক সুলতান মোহাম্মদ আরিফ প্রমুখ।
অন্যদিকে, শ্যাডো অ্যাফেয়ার্স কমিটির উদ্যোগে রাজধানী বিজয়নগরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ‘রাজধানীর নানামুখী সমস্যা ও রাজউকের করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এসব সুপারিশ তুলে ধরা হয়।পার্টির শ্যাডো অ্যাফেয়ার্স বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার আব্বাস ইসলাম খান নোমানের সভাপতিত্বে ও সহ সম্পাদক জাভেদ ইকবালের সঞ্চালনায় সভায় মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন এবি পার্টির বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও প্রযুক্তি বিষয়ক সহ-সম্পাদক এবং শ্যাডো কমিটির মেম্বার স্থপতি মো. আবুল কালাম মাহমুদ সরকার (তানভীর)।
তিনি বলেন, “রাজধানী ঢাকার উন্নয়নের মূল প্রতিষ্ঠান রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা রাজউক। দুঃখজনক বিষয় হলো অপরিকল্পিত নগরায়ন, অবকাঠামো উন্নয়ন, পরিকল্পিত সড়ক নেটওয়ার্কের অভাবে নিত্য যানজট, পানি নিষ্কাশনের অব্যস্থাপনায় সামন্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতার কারণে আন্তর্জাতিক জরিপগুলোতে ঢাকা শহরকে বারবার অবাসযোগ্য শহর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।”তিনি ঢাকাকে বাসযোগ্য শহরে পরিণত করার লক্ষ্যে ৩০ টি সুপারিশ উপস্থাপন করেন।
সভাপতির বক্তব্যে ব্যারিস্টার আব্বাস খান নোমান বলেন, “একটি দেশের রাজধানী তার সামগ্রিক চিত্র ও রাষ্ট্রীয় সক্ষমতার প্রতিচ্ছবি। কিন্তু ঢাকার উন্নয়নে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এখনো পর্যন্ত একটি সুসংগঠিত, দূরদর্শী ও পরিবেশবান্ধব পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ব্যর্থ। এ লক্ষ্যে রাজউক এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের নিকট স্মারকলিপিসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবনা খুব শিগগিরই পেশ করা হবে।
উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার যোবায়ের আহমেদ ভুইয়া, এবিএম খালিদ হাসান, শ্যাডো বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার আব্বাস ইসলাম খান নোমান, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ লোকমান ও সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল বাসেত মারজান, শাহাজাহান ব্যাপারী, মাহজাবিন হাজরা, ইমরান মাহমুদ, সাইয়েদ মুস্তাকিম প্রমুখ।
দেশকন্ঠ/এআর
আমাদের কথা
ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বব্যাপী অনলাইন মিডিয়া। গতি ও প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে মানুষও তথ্যানুসন্ধানে নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছে অনলাইন। যতই দিন যাচ্ছে, অনলাইন মিডিয়ার সঙ্গে মানুষের সর্ম্পক তত নিবিড় হচ্ছে। দেশ, রাষ্ট্র, সীমান্ত, স্থল-জল, আকাশপথ ছাড়িয়ে যেকোনো স্থান থেকে ‘অনলাইন মিডিয়া’ এখন আর আলাদা কিছু নয়। পৃথিবীর যে প্রান্তে যাই ঘটুক, তা আর অজানা থাকছে না। বলা যায় অনলাইন নেটওয়ার্ক এক অবিচ্ছিন্ন মিডিয়া ভুবন গড়ে তুলে এগিয়ে নিচ্ছে মানব সভ্যতার জয়যাত্রাকে। আমরা সেই পথের সারথি হতে চাই। ‘দেশকণ্ঠ’ সংবাদ পরিবেশনে পেশাদারিত্বকে সমধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে বদ্ধপরির। আমাদের সংবাদের প্রধান ফোকাস পয়েন্ট সারাবিশ্বের বাঙালির যাপিত জীবনের চালচিত্র। বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের সংবাদও আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা একঝাক ঋদ্ধ মিডিয়া প্রতিনিধি যুক্ত থাকছি দেশকণ্ঠের সঙ্গে।