দেশকন্ঠ প্রতিবেদন : রেফারির শেষ বাঁশি। বাংলাদেশের ফুটবলাররা কেউ বসে পড়লেন। আবার কেউ তাকিয়ে রইলেন আকাশের দিকে। ডাগ আউটে কোচিং স্টাফেও রাজ্যের হতাশা। র্যাংকিংয়ে প্রায় ১০০ ব্যবধানে এগিয়ে থাকা লেবাননের বিপক্ষে পয়েন্ট পাওয়ার দারুণ সুযোগ হাতছাড়া করেছে বাংলাদেশ। পুরো ম্যাচে লড়াই করেও নিজেদের ভুলে ০-২ গোলে হেরে গেছে জামাল ভূঁইয়ারা। বৃহস্পতিবার ব্যাঙ্গালুরুর শ্রী কান্তেরাভা স্টেডিয়ামে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে নিজেদের উদ্বোধনী ম্যাচে খেলতে নেমে পুরো ম্যাচেই দারুণ রক্ষণ করেছে বাংলাদেশে। যদিও ম্যাচের শেষ দিকে তথা ৭৯ মিনিটে একটি ভুলে করে বসে। সেই ভুলেরই মাশুল দিতে হয়েছে। একটি সাধারণ বল দেওয়া নেওয়ায় ভুল হয় এবং লেবাননের দুই ফরোয়ার্ড বল নিয়ে বক্সের মধ্যে প্রবেশ করেন। হাসান মারতুকের উদ্দেশে ঠেলা বলটি জালে পাঠাতে ভুল করেননি। গোলরক্ষক জিকো এগিয়ে আসলেও তিনি ছিলেন নিরুপায়। বল গোললাইন অতিক্রম করার সঙ্গে সঙ্গে বসে পড়েন ডিফেন্ডার তারিক কাজী। তার ভুলেই বাংলাদেশ গোল হজম করেছে।
ম্যাচে পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ গোলের মরিয়া চেষ্টা করে। কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা খেলোয়াড় ও কৌশল বদলিয়ে ম্যাচে ফেরার সর্বাত্মক চেষ্টাই করেন। ৬ মিনিট ইনজুরি সময়ে সমতার সুযোগ পেলেও কাজে লাগাতে পারেনি বাংলাদেশ। উল্টো কাউন্টার অ্যাটাকে আরেকটি গোল হজম করে। খালিল লেবাননের জয় সুনিশ্চিত করেন। ২-০ স্কোরলাইনে ২০১১ সালে দুই দলের সর্বশেষ লড়াইয়ে জিতেছিল বাংলাদেশ। আজকের ম্যাচটি বাংলাদেশ হারলেও যথেষ্ট ভালো ফুটবলই খেলেছে। বিশেষ করে দ্বিতীয়ার্ধে হ্যাভিয়ের তিন জন খেলোয়াড় প্রায় একই সময় বদল করার পর ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ দারুণভাবে বাংলাদেশের কাছেই ছিল। ৬০ মিনিটে ম্যাচের প্রথম সেরা সুযোগটি পেয়েছিল বাংলাদেশই। নিজেদের অর্ধ থেকে পাওয়া একটি লং বল ফয়সাল আহমেদ ফাহিম গোলরক্ষককে একা পেয়েছিলেন। বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বক্সে প্রবেশ করে একা গোলরক্ষককে পেয়েও গোল করতে পারেননি।
বাংলাদেশের এই আক্রমণের আগে অবশ্য লেবাননও কয়েকটি সুযোগ মিস করেছে। ডান প্রান্ত দিয়ে বাংলাদেশের বক্সে প্রবেশ করেছিল কয়েকবার। গোল করতে পারেনি। ম্যাচের গতি যখন ড্রয়ের দিকে তখনই বাংলাদেশের ডিফেন্ডারদের একটি ভুলে ম্যাচে ফিরে লেবানন। প্রথমার্ধে লেবাননের প্রাধান্য ছিল আরো বেশি। তারিক কাজী, তপু বর্মণের নেতৃত্বে বাংলাদেশের রক্ষণভাগ সেভাবে ভাঙতে পারেনি লেবানিজরা। গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকোও দুর্দান্ত দু’টি সেভ করেছেন। বাংলাদেশ রক্ষণেই বেশি মনোযোগ দিয়েছে। লেবানিজদের আক্রমণ রুখে বাংলাদেশের ফুটবলাররা সুমন রেজার উদ্দেশে বল ঠেলেছে কয়েকবার। সুমন একা বল দখল করে রাখলেও আক্রমণ সেভাবে রচিত করতে পারেননি। ম্যাচের ৪৩ মিনিটে বাংলাদেশ একটি দারুণ আক্রমণের ভিত গড়েছিল। ডান প্রান্ত দিয়ে বক্সের ভেতরে প্রবেশ করেন ফয়সাল আহমেদ ফাহিম। সুমনের উদ্দেশ্যে তার ক্রস নেয়ার মুহূর্তে লেবানিজ ডিফেন্ডার ক্লিয়ার করে কর্নার করেন। বাংলাদেশ প্রথমার্ধে একটি কর্নার পেলেও লেবানিজরা আদায় করেছে চারটিরও বেশি। শুধু কর্নার নয় ফ্রি-কিক পেয়েছে বেশ কয়েকটি। সোহেল রানা একটি বিপদজ্জনক ফাউল করেছিলেন। এই ফাউল আর কয়েক গজ এদিক-ওদিক হলে পেনাল্টিতে রূপ নিতে পারত। যদিও সেই ফ্রি-কিক থেকে আক্রমণই করতে পারেনি লেবানন। লেবানন বল পজেশনে এগিয়ে থাকলেও আক্রমণে সমন্বয় সেভাবে করতে পারেনি। ব্যাঙ্গালুরুর শ্রী কান্তেরাভা স্টেডিয়ামের মাঠটি খানিকটা ভারী। তাই দুই দলেরই গতিময় ফুটবল খেলায় কিছুটা প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়।
দেশকন্ঠ/অআ