• বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১  নিউইয়র্ক সময়: ০৭:১৬    ঢাকা সময়: ১৭:১৬

জেনারেল মন্জুর হত্যা

  • মতামত       
  • ২০ মে, ২০২৪       
  • ৬৯
  •       
  • ২৩:৫২:১৩

জেনারেল জিয়া হত্যার পর দিন জিওসি জেনারেল মন্জুর দরবারের আয়োজন করেন। তিনি ছিলেন চমৎকার বক্তা। দরবারে সৈনিক, জেসিও, অফিসারের সামনে তিনি গুছিয়ে কথা বলতেই পারতে ছিলেন না, একজন ডিভিশন কমান্ডার। তিনি হাতে বুট নিয়ে সৈনিকদের দেখাতে থাকলেন এ বুট কত নিম্নমানের। প্রশ্ন হচ্ছে এ রকম সব অবান্তর এবং অগুছালো কথা, সৈনিকরা ফিসফাস শুরু করল বুটের কারণে কেন প্রেসিডেন্ট জিয়াকে হত্যাই করতে হবে।

খুব ছোট্ট কারনে জেনারেল মন্জুর হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তাকে ঢাকাতে স্টাফ কলেজের কমাডান্ট করে পোষ্টিং করা হয়েছিল, চিটাগং ডিভিশন ছিল ডিভ প্লাস শক্তির। শান্তি বাহিনীর এ্যাম্বুস এবং লড়াইয়ের জন্য এই ডিভিশন ছিল দেশের সব থেকে শক্তিশালী, তার কমান্ডার আলাদা মর্যাদার , এভাবে পোস্টিং তার না-পছন্দ। তবে এ সব ঘটনার একদম নিভৃতচারী হলেন জেনারেল এরশাদ। আর্মি তখন মুক্তিযোদ্ধার দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। পাকিস্তানের বন্দি শিবিড় থেকে মানে রিপার্টিয়েডে সব অফিসাররা কোনঠাসা আর্মিতে। 
 
জিয়া হত্যার পর দরবার করেও সিপাহীদের মন গলাতে না পেরে তিনি তার অফিসে কনফারেন্স ডাকেন। এ্যাসল্ট কোর্সে যাওয়া রফিকের ডেকে তাকে কালুর ঘাট ব্রিজ কন্ট্রোলে রাখতে বললেন আর কুমিল্লা থেকে আসা বাহিনী আটকাতে বললেন। রফিক বান্দরবনে কর্নেল মুহিতকে কল করলে। তিনি বলেন কোথায়ও যাবার দরকার নেই। এই পরিস্থিতিতে এ্যসল্টকোর্স কম্পিটিশন হবে না। তুমি সবাইকে নিয়ে বান্দরবন চলে আস।
 
কনফারেন্সে পরিস্থিতি খারাপ বুঝে জেনারেল মন্জুর কিছুক্ষণের বিরতি দিলেন এবং বাসায় গেলেন। তিনি আর কনফারেন্সে ফেরত না এসে পালানোর পথ গ্রহণ করলেন। যে মন্জুর তার তীক্ষ্ন বুদ্ধির জন্য সব্বার কাছে প্রশংসিত। তিনি খেই হারালেন। পালাচ্ছেন গাড়িতে মেজর জেনারেলের দুই ষ্টার লাগান আর ডিভ কমান্ডারের ফ্লাগ। এরই মধ্যে জেনারেল এরশাদ মন্জুরকে ধরিয়ে দিতে পারলে পাঁচ লাখ টাকার ঘোষনা করলেন। মন্জুর ফটিকছড়িতে ধরা পরলেন। জাতীয় রক্ষী বাহিনীর মেজর এমদাদ জেনারেল মন্জুরকে চিটাগং ক্যান্টনমেন্টে জীপের পিছনে বসিয়ে রওনা হয়, পরে জেনারেল মন্জুরের মাথার পিছনে একটি পিস্তলের গুলিতে মৃত পাওয়া যায়। মুক্তিযাদ্ধা জেনারেল জিয়া শেষ , শেষ আর এক মুক্তিযোদ্ধা জেনারেল মন্জুর, তাতা থৈ থৈ নৃত্য করা মুক্তি যোদ্ধাদের- দিনা দিন দিন ফুরাইল শুকনাতে তরণী।
 
এত সব ঘটল। পাকিস্তান থেকে আসা রিপার্টিয়ার্ডরা সব কিছুতেই অগ্রাধিকার পেল আর এ সবের মূল কারিগর, শান্ত  নিভৃতচারী দাবা খেলার ওয়েটিং মুভে বিশ্বাসী জেনারেল এরশাদ। জেনারেল এরশাদ স্যারের মগজ জাদুঘরে রাখাই যায়। 
 
লেখক : সাবেক অধিনায়ক  জাতীয় ও সেনাবাহিনী হকি দল, জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার জয়ী এবং কলামিস্ট
দেশকণ্ঠ//
 

 

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

আমাদের কথা

ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বব্যাপী অনলাইন মিডিয়া। গতি ও প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে মানুষও তথ্যানুসন্ধানে নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছে অনলাইন। যতই দিন যাচ্ছে, অনলাইন মিডিয়ার সঙ্গে মানুষের সর্ম্পক তত নিবিড় হচ্ছে। দেশ, রাষ্ট্র, সীমান্ত, স্থল-জল, আকাশপথ ছাড়িয়ে যেকোনো স্থান থেকে ‘অনলাইন মিডিয়া’ এখন আর আলাদা কিছু নয়। পৃথিবীর যে প্রান্তে যাই ঘটুক, তা আর অজানা থাকছে না। বলা যায় অনলাইন নেটওয়ার্ক এক অবিচ্ছিন্ন মিডিয়া ভুবন গড়ে তুলে এগিয়ে নিচ্ছে মানব সভ্যতার জয়যাত্রাকে। আমরা সেই পথের সারথি হতে চাই। ‘দেশকণ্ঠ’ সংবাদ পরিবেশনে পেশাদারিত্বকে সমধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে বদ্ধপরির। আমাদের সংবাদের প্রধান ফোকাস পয়েন্ট সারাবিশ্বের বাঙালির যাপিত জীবনের চালচিত্র। বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের সংবাদও আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা একঝাক ঋদ্ধ মিডিয়া প্রতিনিধি যুক্ত থাকছি দেশকণ্ঠের সঙ্গে।