• বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১  নিউইয়র্ক সময়: ০৮:৫২    ঢাকা সময়: ১৮:৫২

কিংবদন্তি পেলের ক্যারিয়ারের সেরা মুহূর্তগুলো

দেশকণ্ঠ প্রতিবেদন : শুরু হয়েছে পেলের দুইদিন ব্যপী শেষকৃত্যানুষ্ঠান। এখন থেকে এই ফুটবলারকে পরিসংখ্যানেই খুজতে হবে। তবে ফুটবল কতটা সুন্দর তার বাস্তব প্রমাণ পেলে। ফুটবলের জনপ্রিয়তা বাড়াতে তার চেয়ে বেশি অবদান নেই আর কারও। তিনটি বিশ্বকাপজয়ী একমাত্র ফুটবলার তিনি। স্কোরিংয়ে ইতিহাস সেরা ফরোয়ার্ডদের নেতা। এমনই একজন কিংবদন্তিকে হারিয়ে শোকে আচ্ছন্ন বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গন। জেনে নেওয়া যাক পেলের অবিশ্বাস্য ক্যারিয়ারের সর্বশ্রেষ্ঠ কিছু মুহূর্ত। যা দিয়ে তাকে আলাদাভাবে মূল্যায়ন করা যেতে পারে।
 
দুই অভিষেকেই গোলের রেকর্ড
ফুটবলার হিসেবে পেশাদার ক্যারিয়ারে পেলের অভিষেক ১৯৫৬ সালের ৭ সেপ্টেম্বর। মাত্র ১৫ বছর বয়সে লিজেন্ডারি ফরোয়ার্ড গায়ে জড়ান সান্তোসের জার্সি। চুক্তির কয়েকমাস পরেই করিন্থিয়ানস সান্তো আন্দ্রের বিপক্ষে অভিষেক হয় তার। ৭-১ গোলে জয়ের ম্যাচে জালের দেখা পান পেলে, ক্লাবে সূচনা হয় তার স্বর্ণযুগের যা ১৮ বছর দীর্ঘ হয়। ১৯৫৭ সালের ৭ জুলাই ঐতিহ্যবাহী মারকানায় আন্তর্জাতিক অভিষেক হয় পেলের। আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ম্যাচটিতে ২-১ ব্যবধানে হারে ব্রাজিল। ওই ম্যাচেই প্রথম আন্তর্জাতিক গোলের দেখা পান পেলে। সেসময় তার বয়স ছিল ১৬ বছর ৯ মাস। তখন থেকে এখন পর্যন্ত ব্রাজিলের সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতা পেলে।
 
উত্থান একজন সুপারস্টারের
এরপর থেকেই বিশ্ব দরবারে পেলে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন ১৯৫৮ সুইডেন বিশ্বকাপে। গ্রুপপর্বে তাকে মাত্র একবার দেখা গেলেও কোয়ার্টার ফাইনালের পর থেকে তার বিস্ফোরক পারফরম্যান্সের সাক্ষী হয় বিশ্ব। ওয়েলসের বিপক্ষে পেলের গোলে ব্রাজিল জিতে ১-০ গোলে। সেমিফাইনালে পেলের হ্যাটট্রিক, ফ্রান্স বিধ্বস্ত হয় ৫-২ গোলে। ফাইনালে ফের পেলে জাদু। সুইডেনে তার জোড়া গোলে ব্রাজিল জিতে ৫-২ ব্যবধানে এবং প্রথমবারের মতো উঁচিয়ে ধরে বিশ্বকাপ শিরোপা। পেলেও প্রথম অংশগ্রহণে বাজিমাত করেন বিশ্বমঞ্চে। সেখানেই একজন সুপারস্টারের উত্থান। এরপর আর কখনোই পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি পেলেকে।
 
মহাদেশীয় চ্যাম্পিয়ন নিয়ে হতাশা
পেলের সফরসূচি তাকে ব্রাজিলের হয়ে জিততে দেয়নি কোপা আমেরিকা। মাত্র একবারই টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছেন তিনি। ১৯৫৯ সালে সেই সংস্করণে চ্যাম্পিয়ন না হতে পারলেও গোল্ডেন বুট নিয়ে ফিরেছিলেন ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার। তবে ক্লাবপর্যায়ে মহাদেশীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন প্রয়াত এই ফরোয়ার্ড। ১৯৬২ সালে পেনারোলের বিপক্ষে কোপা লিবার্তাদোরেসের ফাইনালে দুই লেগ শেষ হয় সমতায়। পরে নিরপেক্ষ ভেন্যু এস্তাদিও মনুমেন্টালে প্লে-অফে সান্তোসকে জেতান পেলে। সান্তেÍাসকে প্রথমবার দক্ষিণ আমেরিকার শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট পড়ানোর মিশনে জোড়া গোল করেন ব্রাজিলিয়ান গ্রেট। এক বছর পর, আলভিনেগ্রোরা মুকুট ধরে রাখে। বোকা জুনিয়র্সের বিপক্ষে ফাইনালে গোল করেন পেলে। এই দুই জয় ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপে ইউরোপিয়ান প্রতিপক্ষের বিপক্ষে সান্তোসকে জায়গা করে দেয়। উভয় বছরে জ্বলে উঠে ক্লাবটি, প্রথমে পরাজিত বেনফিকাকে- পেলে দুই পায়ে করেছিলেন পাঁচ গোল। তারপর আরেক প্লে-অফে তাদের চেয়ে ভালো করে এসি মিলান।
 
টানা পাঁচবারের শ্রেষ্ঠত্ব
১৯৬০ এর দশক জুড়ে পেলে সান্তোসের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ দলের নেতৃত্বে ছিলেন। তখন তার ডাকনাম ছিল ‘ওস সান্তাস্টিকোস’। ক্লাবটির সোনালি প্রজন্মের কৃতিত্বের তালিকা বিশাল এবং তারা সব সময় সবকিছুর কেন্দ্রে ছিল। ১৯৬১ থেকে ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত টানা ব্রাজিলিয়ান সিরি’আয় চ্যাম্পিয়ন হওয়া ছিল সান্তোসের সেরা অর্জন। ওই পাঁচ আসরের তিনটিতে সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার উঠে পেলের হাতে। ১৯৬২ সালে বিশ্বে প্রথম ট্রেবল শিরোপা জয়ের স্বাদ পান তারা। ওই বছর পেলে ও তার বাহিনী জিতেছিল কোপা লিবা কাপা লিবার্তাদোরেস, ক্যাম্পেওনাতো পাওলিস্তা এবং টাসা ব্রাসিল।
 
পেলের কারণে একটি গৃহযুদ্ধ বন্ধ?
পেলের উত্থানের পরপরই সান্তোস ট্রফির লোভ ভুলে ‘লাভজনক’ ইন্টারন্যাশনাল ট্যুরকে অগ্রাধিকার দিতে শুরু করে। বিদেশ ভ্রমণগুলোর মধ্যে একটিতে, সান্তাস্টিকোস নাইজেরিয়ায় যায় যখন দেশটিতে চলছিল নৃশংস গৃহযুদ্ধ। পেলে এবং তার সতীর্থরা যখন লোগেস প্রবেশ করেন তখন সেখানে ৪৮ ঘণ্টার জন্য থেমেছিল বন্দুকযুদ্ধ। যুদ্ধে বিরতি পড়ায় সফরকারীদের সঙ্গে সুপার ঈগলের ম্যাচ উপভোগ করতে পেরেছিল সবাই, যা অমীমাংসিত থেকে যায় ২-২ গোলে। বলা বাহুল্য যে সান্তোসের হয়ে দুটো গোলই করেন পেলে। প্রায় ৬০ বছর পরে, এই গল্পের সত্যতা এখনো বির্তকিত। কেউ কেউ দাবি করেন, পেলেরা পৌঁছানোর একরাত আগেই থামানো হয় যুদ্ধ। অনেকে নাকি আবার ম্যাচ চলাকালীন স্টেডিয়ামের বাইরে গুলির শব্দ শুনেছেন। পেলে নিজেও মনে করতে পারেননি কী ঘটেছিল, কারণ প্রতিবছর ঘুরে-ফিরে ১০০টিরও বেশি ক্লাব ম্যাচ খেলতে হতো তাকে।
 
ক্যারিয়ারে এক হাজার গোল!
পেলের ব্যস্ত সফরসূচিতে ‘প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ’ নিয়ে বিতর্কের কারণে, পেলের সঠিক গোলসংখ্যা বিতর্কিত। যাই হোক, ১৯৬৯ সালে ১৯ নভেম্বর সান্তোস এবং ভাস্কো দ্য গামার ভক্তরা যৌথভাবে দাঁড়িয়ে পেলেকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন যখন তিনি ১০০০তম গোলের দেখা পেয়েছিলেন। অবিশ্বাস্যভাবে পেলের বয়স ৩০ বছর না হলেও তখন তিনি সেই মাইলফলকে পৌঁছান। ২০১৫ সালে ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি নিজেই দাবি করেছিলেন যে তিনি ১ হাজার ২৮৩টি গোল করেছেন।
দেশকণ্ঠ/আসো

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

আমাদের কথা

ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বব্যাপী অনলাইন মিডিয়া। গতি ও প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে মানুষও তথ্যানুসন্ধানে নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছে অনলাইন। যতই দিন যাচ্ছে, অনলাইন মিডিয়ার সঙ্গে মানুষের সর্ম্পক তত নিবিড় হচ্ছে। দেশ, রাষ্ট্র, সীমান্ত, স্থল-জল, আকাশপথ ছাড়িয়ে যেকোনো স্থান থেকে ‘অনলাইন মিডিয়া’ এখন আর আলাদা কিছু নয়। পৃথিবীর যে প্রান্তে যাই ঘটুক, তা আর অজানা থাকছে না। বলা যায় অনলাইন নেটওয়ার্ক এক অবিচ্ছিন্ন মিডিয়া ভুবন গড়ে তুলে এগিয়ে নিচ্ছে মানব সভ্যতার জয়যাত্রাকে। আমরা সেই পথের সারথি হতে চাই। ‘দেশকণ্ঠ’ সংবাদ পরিবেশনে পেশাদারিত্বকে সমধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে বদ্ধপরির। আমাদের সংবাদের প্রধান ফোকাস পয়েন্ট সারাবিশ্বের বাঙালির যাপিত জীবনের চালচিত্র। বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের সংবাদও আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা একঝাক ঋদ্ধ মিডিয়া প্রতিনিধি যুক্ত থাকছি দেশকণ্ঠের সঙ্গে।